বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০৬:০৯ অপরাহ্ন
ভয়েস অব বরিশাল:খালের ভেতরে গড়ে তোলা হচ্ছে অবৈধ স্থাপনা।ফেলা হচ্ছে আবর্জনা।এ ছাড়া খালের ভেতরে কচুরিপানা ঠাসা।মাঝেমধ্যে মাটির স্তূপ।অনেক জায়গায় ময়লা-আবর্জনার জঞ্জাল।খালের পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠেছে কাঁচা-পাকা স্থাপনা।এভাবে পানিপ্রবাহের জায়গা সংকুচিত হয়ে গেছে।এক কথায় দখল-দূষণে অস্তিত্ব হারাচ্ছে খালটি।
এ চিত্র গৌরনদী উপজেলার টরকী-বাশাইল খালের।দক্ষিণে পুর্বে আড়িয়াল খাঁ নদী থেকে শুরু হয়ে পঞ্চিমে বাশাইল খাল হয়ে পয়সার হাট নদীর সঙ্গে মিশেছে খালটি।খালপাড়ের বাসিন্দা মো.আনয়ার বলেন,৫০ ও ৬০-এর দশকে খরস্রোতা এ খালকে নদী মনে হতো।নদী ও কয়েকটি শাখা খালের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ায় নৌপথে পরিবহন অনেক সহজ ছিল।
এ কারণে তখন খালপাড়ে গড়ে ওঠে উপজেলার টরকী বন্দর অভিজাত পরিবারগুলোর বসতি।তখন এ খালে একবার সুতিজাল টানলে এক নৌকা মাছ পাওয়া যেত।মো.নান্নু নামে স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষক বলেন,প্রায় ৮ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য ও ১৫০-২০০ ফুট প্রস্থের এ খালটি উপজেলার পানিপ্রবাহে হৃৎপিন্ডের মতো কাজ করছে।এটি দুটি নদী ও চারটি খালের সঙ্গে সংযুক্ত।খালটির উন্নয়ন করে উপজেলার টরকী বন্দর জলাধার হিসেবে এটিকে ব্যবহার করা জরুরী।উপজেলার ধানডোবা গ্রামের কৃষক হানিফ বেপারী বলেন,দীর্ঘদিন ধরে খাল খনন না করার কারণে দুপাশে আগাছা জন্মেছে।ফলে পানি সময়মতো নিষ্কাশন হচ্ছে না।যার ফলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।খালটি যথাযথভাবে সংস্কার না করায় দিনে দিনে ভরাট হয়ে পানি ধারণক্ষমতা ও প্রবাহের স্বাভাবিক গতি বাধা পাচ্ছে।এছাড়া খাল পাড়ের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ভূমি মালিকরা খালের পাড় কেটে নিচের কিছু অংশ ভরাট করে আবাদি জমি তৈরি করে নিজ দখলে নিচ্ছেন।ফলে খালের আকার সংকুচিত হচ্ছে।সরেজমিনে দেখা গেছে,খালটির পাড় দিয়ে চলাচলের সুযোগ নেই।উভয় পাড় ঘেঁষে এবং কেউ কেউ খালের ভেতরে কাঁচা-পাকা স্থাপনা নির্মাণ করেছেন।খালের প্রায় মাঝখান পর্যন্ত মাটির স্তুপ করে চাষাবাদ করা হচ্ছে।কচুরিপানায় প্রায় পুরো খাল ঠাসা।উভয় পাড়ের বাসিন্দাদের ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে এটি।অনেক বাড়ির শৌচাগার ও নালার সংযোগও দেওয়া হয়েছে এ খালে।
কয়েকজন বাসিন্দা বলেন,এ খাল থেকে দিন দিন দুর্গন্ধ বাড়ছে।বাড়ছে মশা-মাছির উৎপাত।বর্ষাকালে মরা মাছে খাল ভরে যায়।স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ,দখল-দূষণে অস্তিত্ব হারাচ্ছে খালটি।তবে খাল পাড় ও খালের ভেতরে কাঁচা-পাকা স্থাপনা গড়ে তোলা কয়েকজনের দাবি,নিজের মালিকানাধীন জমিতেই তারা এসব স্থাপনা গড়ে তুলেছেন।উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রদিপ কুমার ভয়েস অব বরিশালকে বলেন,খালটি সংস্কার ও দূষণ থেকে মুক্ত করতে পারলে লাখ লাখ টাকার মাছ পাওয়া যেত।যা দিয়ে উপজেলার মাছের চাহিদা অনেকটা মেটানো যেত।
Leave a Reply